আমার শিরায় জ্বলে আগুন,
রুদ্ধশ্বাসে পুড়তে চায়।
আমার চোখে ঝড়ো মিছিল,
শ্লোগানে বদ্ধ উপমায়।

বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭

মুক্তমনা হত্যা ও তার ফলাফল


মুক্তমনাদের ১০০% ই শিক্ষিত এবং জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা করেই তারা মুক্তমনা হয়েছে। একজন মুক্তমনা হওয়া খুব সহজ না। প্রচুর বই পড়ে, জ্ঞানের পিছনে ছুটে সত্যটাকে যারা খুঁজে বের করতে পারে তারাই মুক্তমনা হতে পেরেছে, এ জন্য দরকার অনেক বছরের সাধনা। কাউকে যেমন হঠাৎ করেই মুক্তমনা বানানো যায় না তেমনি কোনো মুক্তমনাকে কখনই কুসংস্কার, মিথ্যা দ্বারা প্রভাবিত করা যায় না। একেকজন মুক্তমনা দেশের একেকটা রত্ন, সম্পদ। এদেরকে রক্ষা করা, নিরাপত্তা দেয়া সরকারের ই দায়িত্ব।
অন্য দিকে ধর্মান্ধরা কুপের মধ্যে জন্মে কুপেই মারা যায়। তাদেরকে জ্ঞান অর্জন করতে হয় না, তারা আলোর পথে হাটতে চায় না, কুপের অন্ধকারকেই তারা শ্রেয় মনে করে। কেউ তাদেরকে আলোর পথ দেখালেও তারা ক্ষিপ্ত হয়, রক্তপাতের মাধ্যমে অন্ধকারকে আরো গভীর করে। আলো হাতে যখন একেকজন মুক্তমনা দেশের মানুষকে এই অন্ধকার থেকে বের করতে এগিয়ে আসে, জ্ঞান চর্চাক্ষেত্রে পরিনত করতে চায় সমগ্র দেশকে তখন এসব আধারের প্রানীরা তাঁদের রক্তের জন্য পাগল হয়ে যায়। জিহাদের নামে মুক্তবুদ্ধিকে তারা ধূলিসাৎ করতে চায়।
কিন্তু তারা যেটা জানে না সেটা হলো তলোয়ারের শক্তি কখনই কলমের চেয়ে বেশি ছিলো না। ইতিহাস থেকে বুঝা যায় এসব ধর্মান্ধদের বারবার দুর্গন্ধময় ডাস্টবিনে ছুরে ফেলা হয়েছে। এখন হয়ত তারা সাময়িক ভাবে কিছু মুক্তমনা হত্যা করে আনন্দিত হচ্ছে কিন্তু এটাই তাদের ধ্বংস ডেকে আনছে তা তারা বুঝতেও পারছে না। পাকিস্তানেও এরকম একজন দুজন মুক্তমনা, নাস্তিক, মানবাধিকার কর্মী হত্যা থেকে শুরু হয়েছিলো। আজকে সেই পাকিস্তানে হাজার হাজার মানুষ মারা হচ্ছে ধর্মের নামে।




পাকিস্তানে যেসব অন্ধরা মুক্তমনা, নাস্তিক কিংবা বিজ্ঞানলেখকদের হত্যা দেখে প্রতিবাদ করে নি, উল্টো মনে মনে খুশি হয়েছিলো তারাই আজকে পাখির মত মরছে। বাঙলাদেশে আজকে একজন দুজন করে মুক্তমনা হত্যা হচ্ছে অথচ কেউ প্রতিবাদ করছে না, সরকার চুপ করে বসে আছে, সবাই যেনো মুক্তমনা হত্যায় সমর্থন দিচ্ছে ; এই তারাই এক সময় রাস্তায় পরে মরে থাকবে।
মুক্তমনাদের হত্যা করে জাতিকে জ্ঞানশূন্য করা হচ্ছে। আর জ্ঞানশূন্য জাতি কখনই ভালো থাকতে পারে না। এর প্রমান পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, মিশর, লিবিয়া, মরোক্কো, ইয়েমেন, সুদানের মত দেশের দিকে তাকালে বুঝা যায়। ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ তাদেরকে কোথায় নিয়ে গেছে সেটা আজ ও বাঙালি উপলব্ধি করতে পারছে না। অন্যদিকে মুক্তচিন্তার চর্চা করে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো আজ পৃথিবী শাসন করছে। আমরা কি দেখেও বুঝি না কোনটা খারাপ আর কোনটা ভালো?

ভারত কি আমাদের বন্ধু!নাকি আমরা ভারতের দাস হয়ে আছি!!


একাত্তরে ভারতের সহযোগীতায় পাকিস্তানিদের দেশছাড়া করে আমাদের স্বাধীনতা এনেছিলাম। কিন্তু যুদ্ধ শেষে সকল অস্ত্র, মুদ্রা ভারত তার দেশে নিয়ে গেলো। বরিশালের বীর সন্তান মেজর জলিল এর প্রতিবাদ করেছিলেন বলে মুক্তিযুদ্ধের জন্য তিনি কোনো পদক ও পান নি। বাঙলাদেশের উপর ভারত বাঙলাদেশ স্বাধীন হওয়া থেকেই প্রভাব বিস্তার শুরু করলো।
বৃটিশরা দেশভাগ করে চলে গিয়েছে ১৯৪৭ এ।বাঙলা অনেক আগেই ভাগ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক, খনিজ সম্পদে ভরপুর এলাকাগুলো পাশ থেকে সরিয়ে একটা দেশকে দেয়া হয়েছিলো। আমাদের দেশের পূর্বপাশের জেলাগুলোর দিকে তাকালেই দেখতে পাই দেশের সব খনিজ বা প্রাকৃতিক সম্পদ সব এ এলাকাতেই অবস্থিত। এর আরো পূর্বে ভারতের সেভেন সিস্টার্সে ( নাগাল্যান্ড, মনিপুর, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা,অরুনাচল) কি পরিমান সম্পদ আছে সেটা চিন্তাও করা যায় না যদিও ভৌগলিকভাবে সেটা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন। এ অঞ্চলটার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করতে হয়েছিলো একটা সময়ে। আমি এখন যেটা বলছি সেটা ছিলো শুরু কিন্তু তখন বাঙলাদেশ ছিলো না।
স্বাধীনতার পরের ঘটনাগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফারাক্কা বাঁধ। আন্তর্জাতিক একটা নদীতে ভারত কোনো কিছুর তোয়াক্বা না করে একটা বাঁধ বানালো। দেশের একটা অংশের কৃষি পুরপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গেলো। আমরা আমাদের পানি পাই না, জমি সেচ দিতে পারি না উৎপাদন হবে কিভাবে! প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার কৃষি ক্ষতি হতে থাকলো। আমাদের কথা তারা তখন ও শুনে নি, এরপর ও শুনে নি।
এরপরে দেখা যায় দহগ্রাম-আঙ্গুরপোতা ছিটমহল সমস্যা। বাঙলাদেশের এই অংশে যাওয়ার জন্য একটাই রাস্তা যা ভারতের মধ্যে। বাঙলাদেশের সাথে ১৯৭৪ সালে ভারতের এই চুক্তি হয়েছিলো যে ভারত বাঙলাদেশকে ঐ তিনবিঘা করিডোর খুলে দিবে বিনিময়ে বাঙলাদেশ ভারতকে বেরুবাড়ী ছিটমহল দিয়ে দিবে। এ জন্য বাঙলাদেশ ১৯৭৪ সালেই সংবিধানের ৩য় সংশোধনীতেই বেরুবাড়ী হস্তান্তরের বিধান উল্লেখ করে। কিন্তু ভারত কি আমাদের সেই তিনবিঘা করিডোর দিয়েছিলো? হা দিয়েছিলো তবে দিনে ১ ঘন্টার জন্য শুধু খুলে দিতো। বাকি সময় বন্ধ থাকতো..। ১৯৯২ এর ২৬ জুন এই চুক্তির কিছুটা বাস্তবায়িত হলেও পুরোপুরি আমরা পাই নাই এটা। পরবর্তীতে সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকতো। শেষমেশ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত তিনবিঘা করিডোর পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেয়।ভারত বড় ভাই তো! তাই একটু ঠেলাঠেলি করতে হয়েছে আরকি!!
বাঙলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার হারিয়াভাঙ্গা নদীর মোহনায় একটা দ্বীপ জেগে উঠলো। ভারত দাবি করে এটা তার, বাঙলাদেশ বলে এই দ্বীপ আমার। আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার গেলো, রায় বাঙলাদেশের পক্ষে। কিন্তু ভারত ছারবে না, বাঙলাদেশকে দিবে না। শেষে সেই দ্বীপ আবার তলিয়ে গেলো, আর কিছু করতে না পেরে ভারত ক্ষান্ত দিলো।
আসি তিস্তা প্রসঙ্গে। তিস্তায় ৭০০০-৮০০০ কিউসেক পানির স্বাভাবিক প্রবাহ হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন এর জন্য তিস্তায় বাধ দিলো ভারত। এখন বাঙলাদেশে পানি আসে ৩০০-৪০০ কিউসেক, মানে মরুভূমি। যখন বর্ষা কাল তখন ভারত পানি ছেরে দেয় আর আমরা ভাসি, যখন খরা তখন পানি আটকায় আমরা পানি না পেয়ে মরি।মঙ্গা কি তা বাঙলাদেশের কৃষকরা জানতো না! ভারত সেটা ভালো করে শিখিয়ে দিয়েছে। বড় ভাই শিখাবে না তো কে শিখাবে? হুম!!
এরপরে আমরা পানি চাইলাম বারবার। ভারত পানি দিলো না।পশ্চিমবঙ্গের মমতা তাদের কৃষকদের প্রতি মমতা দেখিয়ে আন্তর্জাতিক নদীতে ইচ্ছেমত পানির পরিমান নিয়ন্ত্রন করতেই পছন্দ করবেন। শেষমেশ যখন ইলিশে টান পড়লো তখন আসলো বাঙলাদেশের কাছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিলে "পানি আসলে ইলিশ ও যাবে "। আর কি করার! এখন এভাবে গুতাচ্ছে যে ট্রানজিট দাও তাইলে পানি দিবো। আরে অধিকার আর আবদার কি এক জিনিস নাকি!! আমাদের কাছে ভারত ট্রানজিট আবদার করতে পারে কিন্তু তিস্তার পানি আমাদের অধিকার। ভারত এই পানি আটকে রাখার কে? ট্রানজিট আমরা দিবো কি দিবো না সেটা পরে ভাববো, আগে পানি দাও। কিন্তু সেই বড় ভাই সমস্যা! তাকে কিছু বলাও যায় না।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ব্যাপারটা আরো মারাত্মক। ভারতের টিভি চ্যানেল গুলো বাঙলাদেশের সবখানে দেখা যায়। তারা টিভি প্রোগ্রাম তৈরি করে আমাদের কথা মাথায় রেখে। অথচ আমাদের চ্যানেল গুলো ওদের দেশে দেখার সুযোগ নেই। আজকে আমাদের দেশে পাখি ড্রেস, কিরনমালা ড্রেসের জন্য হাহাকার লেগে যায় অথচ আমাদের তাঁত শিল্প হুমকির মুখে। নিজেদের থেকে আমরা ওদের কপি করতে বেশি পছন্দ করছি। বাঙলাদেশের মিউজিক এশিয়ায় সেরা অথচ দেশের নিউ জেনারেশন এর একটা অংশ হিন্দি গান ছারা কিছুই বুঝে না। এই দোষ অবশ্য পুরোপুরি ভারতকে দিলে হবে না।

Smile


সবচেয়ে আলোচিত যেটা সেটা হচ্ছে সীমান্তহত্যা। ভারত শত শত বাঙালিকে সীমান্তে হত্যা করে প্রতিবছর। হয়ত নিজের দেশের স্বার্থ আছে বলেই করে কিন্তু ফেলানির মত কিছু কিছু ব্যাপার মানা যায় না। একটা মেয়েকে মেরে কাটাতাঁরে ঝুলিয়ে রাখার মত অমানবিকতা আর কি হতে পারে? সেখানে ঝুলে মেয়েটা ঘন্টার পর ঘন্টা পানি পানি করে মারা গেছে। তারপর সেই বি এস এফ সদস্যকে যখন আদালতে নেয়া হলো তখন জানা গেলো এর আগে ও সে আরেকজনকে হত্যা করেছে। অতঃপর আদালত কি রায় দিলো জানেন! মুক্তি দিয়ে দিলো তাকে। দুজন মানুষ খুনের জন্য এই শাস্তি! এখনো নির্বিচারে বাঙলাদেশি হত্যা করা হয় সীমান্তে। বড় ভাই বলে প্রতিবাদ ও করতে পারি না আমরা।
এরকম শত শত দিক আছে যেভাবে ইন্ডিয়া আমাদের প্রতিনিয়ত ক্ষতি করছে। তারপর ও তারা আমাদের বন্ধু। কারন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের সমর্থন অনেক বড় একটা শক্তি ছিলো আমাদের। এখনো কোনো সমস্যায় পরলে ভারতকেই বন্ধুরূপে সবার আগে কাম্য থাকে আমাদের। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা বন্ধু প্রতিবেশি রাষ্ট্রের মতই। কিন্তু বন্ধু যখন একটু শক্তিশালী হয়ে যায় তখন ছোটো ছোটো অনেক খোঁচা আপনি খাবেন সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের ভূখন্ড ছোটো কিন্তু আমাদের ক্ষমতা ও আছে সবার থেকে এগিয়ে যাওয়ার। কাউকে এইটুকু ফিরিয়ে দিতে না আমাদের আগাতে হবে যাতে আর কেউ ছোটো না ভাবতে পারে সে জন্য। তখন ভারত ও তাল মিলাতে আসবে তবে সেটা যেভাবেই হোক ভারতের সাথে সুসম্পর্ক থাকাটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমি চাইবো সেটা যেনো বন্ধুতে-বন্ধুতে সমান সমান হয়.... 

এ কেমন নারীবাদ?




একজন নারীবাদী মেয়ে। আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে এ বছরের শুরুতে এড হয়েছিলো। নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি নাস্তিক যদিও আর দশজনের মত লেখালেখি করে না (আমি দেখি নাই আরকি)। এরকম একজন মেয়েকে স্বাভাবিক ভাবেই দারুন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মনে হবে।

যাইহোক, গত ফেব্রুআরিতে মেয়েটা আমাকে প্রপোজ করেছিলো। আমি তাকে খুব ভালো করে চিনতাম ও না, টুকটাক কথা হয়েছে কখনো কখনো। ভদ্রভাবে তাকে ফিরিয়ে দিতে গিয়ে কিছু প্রশ্ন করতেই হয়েছিলো। সেখান থেকেই প্রথম তার ব্যাপারে কিছু জানলাম আর ভয়ংকর কিছু আবিষ্কার করলাম।

সে আমার উপরে মারাত্মক ভাবে ক্রাশ খেয়েছে যদিও তার বয়ফ্রেন্ড আছে একটা। সেই বয়ফ্রেন্ডের সাথে সম্পর্ক ইদানীং ভালো না (২ মাসের জন্য দার্জিলিং গেছে এ নিয়ে)। তাই সে এখন আরেকটা সম্পর্কে জরাতে চায়। :3 একটু আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করলাম যে সে ফিরে এলে কি হবে? তখন বল্লো, ফিরলে ম্যানেজ করা যাবে নে ; আর সে তো কিছু জানছেও না।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, সে এরকম একাধিক সম্পর্ক করাটাকে তার নারী স্বাধীনতার অংশ ভাবে। একটা ছেলে যদি ৫ টা সম্পর্ক করতে পারে তো একটা মেয়েও পারে। এটা বলে সে আবার আমাকেও উৎসাহিত করতে চায়। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আমার যে গার্লফ্রেন্ড আছে তা সে জানে কিনা!! সে সেটাও জানে আর এটাকে তার সমস্যা মনে হয় নি। ব্লোক মারার আগে একবার তাকে নারীবাদের মানেটা বুঝাতে চাইছিলাম কিন্তু পরে আর সেই চেষ্টা করি নি। এদের ও ভন্ডামি করতে পীরের দরকার হয় আর তারা সেই নারীবাদী পীরের অন্ধভক্ত হয়েই থাকে। তাই জঙ্গিদেরকে বুঝানো আর এদেরকে বুঝানো সমান কঠিন কাজ। আমার এই প্যারা টেনে নেয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না।


আপনারা জানেন এরকম তথাকথিত নারীবাদীদের পরিমান নেহায়েত কম না। নারীবাদ ব্যাপারটা বেগম রোকেয়ার লেখা পড়লে বুঝা যায়। এই মেয়েগুলো সেগুলো পড়েছে কিনা জানি না কিন্তু কিছুই তার ধারন করেনি নিশ্চিত। কারন এসব মেয়ে নারীবাদী ট্যাগটা লাগায় ই তাদের হাজারটা নোংরামিকে জায়েজ করতে।" একটা ছেলে এই করছে তাই আমার ও করতে পারি" এই যুক্তি দেখিয়ে নিজের মত নোংরামি করার ছাড়পত্র পেয়ে গেছে। একটা ছেলে যখন রাস্তায় মূত্রত্যাগ করে সেটাও তাদের অনুসরণ করতে হবে। অথচ কোনো ভালো ছেলেই রাস্তায় মূত্রত্যাগ করে না। তারা শুধু একটা নষ্ট ছেলেকেই অনুসরণ করতে চায়। যেই ছেলেটার একাধিক গার্লফ্রেন্ড থাকে সে কি আদৌ ভালো ছেলে? তাকে ফলো কেনো করতে হবে!! কারন ওখানেই, নারী স্বাধীনতা শব্দটাই এখানে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এখন যদি কেউ নারীবাদী শব্দটাকে গালি হিসেবে ব্যবহার করে তো তাকে সরাসরি দোষ দেয়া যাবে না। কারন নারীবাদ ব্যাপারটা তথাকথিত নারীবাদীরাই বুঝে না। অন্যরা বুঝে উলটে ফেলবে আশা করা যায় না আর তাদের কাছে হয়ত এসব নারীবাদী ট্যাগ লাগানো নারীদের দেখে দেখে "নারীবাদ" শব্দটাকেই নোংরা মনে হবে।

যেটা খারাপ সেটা সবার জন্যেই খারাপ হবে। একটা মেয়েকে দেখে হ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকা যদি লুলামি হয়তো একটা ছেলেকে দেখে হ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকাও লুলামিই। রাস্তায় মূত্রত্যাগ যেই করুক সবার ই শাস্তি হওয়া উচিত।
নারী স্বাধীনতা মানে সিগারেট, মদ, উচ্ছৃঙ্খলতা, লুলামি, একাধিক সম্পর্কে জরানো বা অনৈতিক কিছু করার স্বাধীনতা না। পুরুষেরা যেরকম "আমি পুরুষ মানুষ" কথাটাকে সামনে রেখে হাজার রকমের বেহায়াপনা করার টিকেট পেয়ে যাচ্ছে এখন দেখা যাচ্ছে মেয়েদের মাঝেও কিছু "নারী স্বাধীনতা " কে সামনে রেখে বেহায়াপনায় নেমে যাচ্ছে। ভবিষ্যৎকালে হয়ত একপাশে উচ্ছৃঙ্খল নারী অন্যপাশে বস্তাবন্দী নারী ছাড়া কাউকে দেখতে পাবো না। যখন নারীরাই নারীবাদকে সকাল বিকাল ধর্ষণ করবে তখন সুবিধাভোগী পুরুষরাতো আরো মাথায় চরে বসবে। একেকজনের তখন ৪/৫ টা করে নারীবাদী গার্লফ্রেন্ড থাকবে :3 অন্যদিকে মোল্লারাও এসব উচ্ছৃঙ্খলতার দোহাই দিয়ে অন্য মেয়েদের বস্তাবন্দী করে রাখবে। নারীরা শুধু এক কূপ থেকে উঠে অন্য কূপে গিয়ে পরছে।

অথচ নারী স্বাধীনতার কথা হওয়া উচিত ছিলো অন্যরকম।
রান্নাঘরে জীবন না পার করে পুরুষের সাথে উপার্জনের প্রতিযোগীতায় নামা। ধর্মকে ব্যবহার করে নারীদের ক্রমাগত নিষ্পেষিত হওয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। রাজনীতি করা, সমাজে নিজেদের প্রভাব বাড়ানো, সকল অনৈতিক বিষয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কিংবা সকল বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার যোগ্যতা অর্জন করা। এটাই তো নারী স্বাধীনতা, নারীবাদ। একটা ছেলের রাত ৯টায় কাজ থাকলে একটা মেয়ের ও থাকতে পারে। প্রথার বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পোক্ত করতে হবে নিজের মুক্তির স্বার্থে, স্বাধীনতার স্বার্থে। আর স্বাধীনতা মানেই উচ্ছৃঙলতা না, অনৈতিক কাজ করার অনুমোদন পাওয়া না। সমাজটা পুরুষতান্ত্রিক বলেই আলাদা করে নারীবাদের দরকার আছে। তাই পুরুষরা পৃথিবীর ৯৮ শতাংশ সম্পদের মালিক, এখানে নারীদের জায়গা করতে হবে। পুরুষরা পৃথিবীর ৯৯ শতাংশ ধর্ষণ করে সেখানে জায়গা করতে গেলে আপনাকে ধর্ষকের সমান ঘৃণাই পেতে হবে। যেটা অনৈতিক সেটা সবার জন্যই বর্জনীয় হওয়া উচিত নয় কি?

( একটা অদ্ভুত কারনে আমার মনে হয় এরকম মানুষেরাই প্রগতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি)

কত ক্ষুদ্র আমরা! (প্রথম পর্ব)


আমাদের মহাবিশ্ব কত বিশাল সেটা নিয়ে অনেকের হয়ত প্রচুর আগ্রহ আবার কারো হয়ত একেবারেই নেই। তবে প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ সেটা জানতে চেয়েছে আর যত জেনেছে তত অবাক হয়েছে। এর বিশালতা অবিশ্বাস্য, কল্পনা করার জন্যে অনেক বড় এই মহাবিশ্ব। আর আছে এর নানান উপাদান যেগুলোর তুলনায় আমাদের শহর বা পৃথিবী আরো অনেক অনেক ছোটো। আমরা যদি এই মহাবিশ্বকে কল্পনা করতে চাইতো আমাদেরকে প্রথমে জানতে হবে আমরা আসলে কত ছোটো! পৃথিবীর সাথে অন্যদের তুলনা করলেই সেটা বুঝা যাবে, সাথে ধারনা পাওয়া যাবে মহাবিশ্বের বিশালতা সম্পর্কেও।

সূর্য্যের তৃতীয় গ্রহ আমাদের প্রিয় পৃথিবী। এর একেকটা শহর থেকে আরেকটা শহর, এক দেশ থেকে আরেক দেশ কত দূরের লাগে। অথচ এই সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি আমাদের পৃথিবী থেকে ১৩০০ গুন বড়। ইশ পৃথিবী যদি বৃহস্পতির সমান হত তাহলে বাঙলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব হত বর্গকিলোমিটার প্রতি একজন মাত্র। পৃথিবীর ব্যাস ১২৭১০ কি.মি আর বৃহস্পতির ব্যাস ১,৪২,৯৮০ কি.মি প্রায় (শনি গ্রহের ব্যাস ১২০,৫৩৬ কি.মি. প্রায়)। কত বড় বড় গ্রহ ভাবা যায়! কিন্তু সূর্য্যের কাছে এই বৃহস্পতি গ্রহটা মার্বেলের মত ; সেক্ষেত্রে সূর্য্যের আকৃতিটা হবে একটা ফুটবলের সমান। সূর্যদেবের ব্যাসটা বিশাল, প্রায় ১৩ লক্ষ ৯২ হাজার কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে দেখতে পাওয়া আকাশের উজ্জ্বলতম বস্তু হলো আমাদের সূর্যিমামা। কিন্তু অন্যান্য নক্ষত্রদের তুলনায় আমাদের সূর্য কিন্তু বেশ ছোটো।

সূর্যের থেকেও বড়! সেটা কত বড় তাহলে!! অন্য কিছু নক্ষত্রের ব্যাসের সাথে তুলনা করলে দেখা যাবে সূর্য আসলে ছোটো একটা নক্ষত্র। যেমন, সিরিয়াসের কথাই ধরা যাক, এর ব্যাস প্রায়, ২৩৮০০০০ কি.মি.। আমাদের থেকে ৮.৬ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই নক্ষত্র রাতের আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। সিরিয়াস ক্রমশই আমাদের কাছে আসছে ; এ কারণে আগামী ৬০,০০০ বছরে এর উজ্জ্বলতা আরো বেড়েই চলবে। এরপরে আশা যাক পলুক্সের কাছে। এটা মিথুন রাশিমন্ডলে থাকা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যার ব্যাস হচ্ছে প্রায় ১২ লক্ষ ২৪১ হাজার কিলোমিটার প্রায়।
রাতের আকাশের তৃতীয় উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের নাম আর্কটুরুচ। লিব্রা ও স্করপিয়ন্সের মাঝে আছে এই নক্ষত্রটি যার ব্যাস হচ্ছে ৩৫ লাখ ৭৫১ হাজার কিলোমিটার প্রায়। এটা একটা অরেঞ্জ জায়ান্ট নক্ষত্র যার সাথে আমাদের সূর্যকে তুলনা করা মানে হচ্ছে একটা ফুটবলের সাথে শর্ষে দানার তুলনা করা।

কিন্তু এ তো ক্যাবল বৃহৎ নক্ষত্রের শুরু, এরপরে আসবে সুপার জায়ান্ট গুলো। এই সুপারজায়ান্ট নক্ষত্রগুলো নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করবো, এখন আপাতত এদের আকৃতিতেই থাকি।
প্রথমেই যে সুপার জায়ান্টের কথা আসে সেটা হচ্ছে অরিয়নের রিগেল। এটা অরিয়নের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র এবং রাতের আকাশে থাকা উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের তালিকায় এর অবস্থান সপ্তম। ওই ব্লু সুপারজায়ান্ট এর ব্যাস হচ্ছে ১০৩,০০০,০০০ কি.মি.। কেউ ধাক্কা খাবেন না এখুনি, সামনে আরো আসছে অনেককিছু। আমাদের থেকে ৬৪৩ আলোকবর্ষ দূরে কালপুরুষের বেটেলগজ হচ্ছে একটা সুপার রেড জায়ান্ট নক্ষত্র। এর ব্যাস হচ্ছে ৮৬০,০০০,০০০ কিলোমিটার প্রায়।
বৃশ্চিক রাশির মূল তারাটার নাম আন্টারেস। এটাও একটা রেড সুপারজায়ান্ট যেটা আমাদের থেকে প্রায় ৫৫০ আলোকবর্ষ দূরে আছে। আকাশে জায়গাদখলে মঙ্গলের এই প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যাস হচ্ছে ১,১০৮,০০০,০০০ কি.মি.। এরকম অগণিত সুপারজায়ান্ট নক্ষত্র রয়েছে মহাবিশ্বে। যাদের এক একটা আকার কল্পনাও করা যায় না। এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় নক্ষত্রটি হচ্ছে VY Canis Majoris। এটার ব্যাস হচ্ছে, ২,৯২১,০০০,০০০ কিলোমিটার। যেটার ব্যাস এত বড় সেটার আকৃতি কিরকম হবে কল্পনা করা কঠিন। এর কাছে সূর্য একটা সুইয়ের মাথার থেকেও ছোটো হবে এবং দেখাই যাবে না।




আমরা আসলে কত ছোটো সেটা কিছুটা বুঝা যাচ্ছে।এতক্ষণ শুধু তারা আর গ্রহ নিয়েই বললাম। মহাবিশ্বে রয়েছে আরো বিস্ময়কর অনেক কিছু, যেখানে হয়ত রহস্যেঘেরা অনাবিষ্কৃতদের সংখ্যাও অনেক। মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই ভেবে আসছে এই জগৎ সম্পর্কে, এখনো ভেবেই যাচ্ছে। কৌতূহল ও জানার আগ্রহ মানুষের কাছে ক্রমশই স্পষ্ট করছে মহাবিশ্বের চিত্র। আমার জানা তার থেকেও অনেক অনেক কম। তবুও পরবর্তী পোস্টে নেবুলা, ব্ল্যাকহোল আর গ্যালাক্সির হিসেবে আমাদের অবস্থাটা আরেকটু স্পষ্ট করার চেষ্টা করবো।

মীর জাফরের বংশধর


নাজাফি বংশের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন মীর জাফর। যার পুরো নাম সূজা উল মূলক হিশাম উদ-দৌলা মীর মোহাম্মাদ জাফর আলি খান মহব্বত জঙ। বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক এই মীর জাফরকে কে না চেনে!!! পরবর্তিতে তাদের বংশধরেরা তাই তাদের নামের পদবি পরিবর্তন করে মির্জা রাখে।
এই নাজাফি বংশের শেষ নবাবের নাম ছিলো মনসুর আলী খান। তার ছেলে হচ্ছে সাইয়্যেদ মুহাম্মদ ফতেহ আলী যিনি ইস্কান্দার মির্জার বাবা। হিসেব করে দেখা যায় ইস্কান্দার মির্জা মীর জাফরের চতুর্দশ পুরুষ।
ইসকান্দার মির্জা ১৯৫৮ সালে দেশে সামরিক শাসন জারি করে।এটাই ছিলো পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম সামরিক শাসন। কিন্ত তিনিও বেশদিন ক্ষমতা দখল করে রাখতে পারেন নাই। বিশ্বাসঘাতকের প্রথম পুরুষ ও চতুর্দশ পুরুষ উভয়েই দেশের বারোটা বাজিয়ে গেছেন কিন্তু কেউই ক্ষমতা দখল করে রাখতে পারে নি।
ইস্কান্দার মির্জা বাঙালি ছিলেন।সেনাবাহিনীর চৌকষ সেনা কর্মকর্তা জেনারেল ইশফাকুল মজিদ একজন বাঙালী ছিলেন এবং যোগ্যতা ও সিনিয়রিটির বিচারে তারই পাকিস্তানের প্রথম সেনাপ্রধান হওয়ার কথা ছিলো। অথচ ইস্কান্দার মির্জা এক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা করে এবং লিয়াকত আলী খাঁনকে কুমন্ত্রণা দিয়ে, বাঙালী জেনারেল ইশফাকুল মজিদকে বাদ দিয়ে আইয়ুব খানকে পাকিস্থানের প্রথম সেনাপ্রধান করেন।
মজার ব্যাপার হলো,এই আইয়ুব খানের হাতেই ইস্কান্দার মির্জা উৎখাত হন।বৃটিশরা যেরকম মীর জাফরকে বিশ্বাস করে নি তেমনি আইয়ুব খান ও ইস্কান্দার মির্জাকে বিশ্বাস করতে পারে নি।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি ইংল্যাণ্ডেই ছিলেন।১৯৬৯ সালে ইস্কান্দার মির্জা মৃত্যুবরণ করে।
মীর জাফরের অন্যান্য বংশধরদের মধ্যে আরো আছেন...
-মীর রুহুল আমীন ওরফে চোখা মিয়া যিনি কিনা একজন বিশিষ্ট পাকিস্তানী দালাল এবং রাজাকার।
-মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর , মীর রুহুল আমীনের সন্তান। বর্তমান বিএনপি নেতা ।
- মীর্জা গোলাম হাফিজ
অর্থাৎ , মীর জাফরের বংশধরেরা এখনো আছে যারা তার পূর্বপুরুষদের বদআদর্শ ধরে রেখেছে। নবাবের আদর্শ ধরে না রাখা নিয়ে আফসোস নাই কারন নবাব সিরাজউদ্দৌলা মোটেই আদর্শবান নবাব ছিলেন না। মদ আর নারীতে ডুবে থাকা একজন নবাবের আদর্শ ধরে রাখলেই বরং ভয়ংকর ব্যাপার হত।
বাঙলাদেশের বর্তমান রাজনীতিকে অনেকটা সে সময়ের সাথে তুলনা করা যায়। একদল মীর জাফরের মত দেশের অমঙ্গলকামী অন্যদল নবাবের মত ক্ষমতার যত প্রকার নষ্ট ব্যবহার সম্ভব তা নিয়ে ব্যস্ত। এখন ইংরেজদের ভূমিকায় কে আসবে সেটা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।